Health Tips

হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক ও স্মৃতিভ্রমের ঝুঁকি কমায় যেসব খাবার

হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক ও স্মৃতিভ্রমের ঝুঁকি কমায় যেসব খাবার – বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কিছু দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে সবারই। হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এমনকি স্মৃতিভ্রমের মতো রোগও আছে এই তালিকায়। এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কার কতটা বেশি, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে জীবনধারার ওপর। খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা, বিশ্রাম ও চাপমুক্ত জীবনযাপন এ কারণেই এতটা গুরুত্বপূর্ণ।

পরিশোধিত (রিফাইনড) শস্য এবং প্রক্রিয়াজাত অন্যান্য খাবার, চর্বিজাতীয় খাবার, লাল মাংস প্রভৃতি খেলে দীর্ঘমেয়াদি এসব রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এসব খাবারের বদলে বরং ছোটবেলা থেকেই এমন খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা প্রয়োজন, যা খেলে ভবিষ্যতে এ ধরনের রোগের ঝুঁকি কমে।

হরেকরকম বাদাম ও অন্যান্য বীজ

বিভিন্ন ধরনের বীজে রয়েছে ভিটামিন ই। ভিটামিন ই একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। দীর্ঘ মেয়াদে শরীর সুস্থ রাখতে যেকোনো বীজ খেতে পারেন আপনি। মিষ্টিকুমড়ার বীজ, লাউয়ের বীজ, পুঁইয়ের দানা, চিয়া সিড, তিসি—নানান কিছু রাখতে পারেন আপনার খাদ্যতালিকায়। চিয়া সিড, তিসি, আখরোট ও অন্যান্য বাদামে পাবেন ভিটামিন ই এবং অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের দেহে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের ঝুঁকি কমায়। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে।

ফলমূল, শাকসবজি

রঙিন ফলমূল ও শাকসবজিতে রয়েছে ভিটামিন এ। মিষ্টিকুমড়া, লালশাক, পালংশাক, কচুশাক, গাজর, পাকা আম, পাকা পেঁপে, পেয়ারা, তরমুজ, বিটরুট ইত্যাদিতে পাবেন প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ। আম, জলপাই, লাল ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, পালংশাক, শর্ষেশাক প্রভৃতিতে আরও রয়েছে ভিটামিন ই। টক ফলে পাবেন ভিটামিন সি। তাই পেয়ারা, জলপাই, চালতা, লেবু, কমলা, কাঁচা আম প্রভৃতি ফল থেকে কোনো না কোনোটি খেতেই হবে রোজ। এই তিন ভিটামিনই অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই এসব খাবার খেলে আপনার নানান রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কমবে। তবে মনে রাখবেন, তাপে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। তাই ফলের আচার খেলে ভিটামিন সি পাবেন না। ফলমূল ও শাকসবজিতে যে আঁশ থাকে, তা আবার রক্তের খারাপ চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে বহু রোগের ঝুঁকি কমে। যেসব ফলমূল বা সবজির খোসা খাওয়া সম্ভব, সেগুলো খোসাসমেত খাওয়ার চেষ্টা করুন। আলাদাভাবে সবজির খোসা দিয়েও কিছু মজাদার পদ তৈরি করা যায়। যেমন লাউ বা কুমড়ার খোসা অনায়াসেই ভিন্ন কোনো পদ তৈরিতে ব্যবহার করা সম্ভব।

স্বাস্থ্যকর তেল

যে তেলে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ই থাকে, তা গ্রহণ করা ভালো। সূর্যমুখী তেল, জলপাই তেল, রাইস ব্র্যান অয়েল স্বাস্থ্যকর। মাছের তেলও ভালো খাবার। তবে মাছের চর্বি স্বাস্থ্যকর নয়। তবে খুব বেশি বড় আকারের মাছগুলোর তেল কক্ষ তাপমাত্রায় জমাট বেঁধে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। এ ধরনের তেল না খাওয়াই ভালো। যকৃতের তেলও এড়িয়ে চলুন।

রান্নার জন্য স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহারের খরচ বেশি বলে অনেকেই অবশ্য এসব তেল কিনতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন—

  • ডুবোতেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। কম তেলে খাবার রান্না করুন। যে তেল কক্ষ তাপমাত্রায় জমাট বেঁধে থাকে, সেই তেল গ্রহণ করবেন না। ডালডা, মারজারিন প্রভৃতি বর্জনীয়।
  • একবার ব্যবহার করা তেল আবার ব্যবহার করবেন না।
  • ভাজাপোড়া খাবারের বদলে কিছু সেদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। যেমন সবজি পাকোড়া না করে সবজির সালাদ করতে পারেন সামান্য জলপাই তেল আর কিছু স্বাস্থ্যকর মসলা দিয়ে। স্বাদ পাবেন, সুস্থও থাকবেন।

আরো জানুনঃ

শরীরে যে পরিবর্তনগুলো ঘটলে মানুষ হঠাৎ মারা যায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *