Health Tips

ফাইব্রোমাইলজিয়া একটি দীর্ঘস্থায়ী, জটিল ব্যথা ও ক্লান্তিজনিত অসুস্থতা

ফাইব্রোমাইলজিয়া একটি দীর্ঘস্থায়ী, জটিল ব্যথা ও ক্লান্তিজনিত অসুস্থতা – ফাইব্রোমাইলজিয়া একটি ক্রনিক অবস্থা, যেখানে রোগীর শরীরে বিস্তৃত ব্যথা, ক্লান্তি ও ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। রোগীর মধ্যে প্রায়ই মানসিক অসুস্থতা যেমন উদ্বেগ ও বিষণ্নতা থাকে। এই রোগ সাধারণত নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। অবশ্য পুরুষেরাও আক্রান্ত হতে পারেন।

ফাইব্রোমাইলজিয়া কেন হয়

  • ফাইব্রোমাইলজিয়ার সঠিক কারণ এখনো পুরোপুরি শনাক্ত হয়নি। তবে গবেষণায় কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত হয়েছে—
  • ব্যথাপ্রক্রিয়া: মস্তিষ্কে ব্যথার সংকেতপ্রক্রিয়ায় অস্বাভাবিকতা থাকলে এই রোগ দেখা দিতে পারে।
  • জেনেটিক প্রভাব: পরিবারের ইতিহাস থাকলে রোগটি হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • পরিবেশগত ও মানসিক চাপ: শারীরিক আঘাত, মানসিক চাপ অথবা দীর্ঘমেয়াদি স্ট্রেস রোগের উদ্রেক ঘটাতে পারে।

ফাইব্রোমাইলজিয়ার উপসর্গ

  • ব্যথার ধরন: ফাইব্রোমাইলজিয়ার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়া ব্যথা, যা সাধারণত পেশি ও সংযোগস্থলে (জয়েন্ট) অনুভূত হয়।
  • অতিমাত্রায় ক্লান্তি: রোগী প্রচুর ক্লান্তি ও শক্তিহীনতা অনুভব করেন, যা তাঁদের দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে।
  • ঘুমের সমস্যা: অনেক সময় রোগীরা পর্যাপ্ত বা গভীরভাবে ঘুমাতে পারেন না, ফলে দিনের শুরুতেই তাঁদের ক্লান্তি বাড়ে।
  • মস্তিষ্কে অস্পষ্টতা (ফাইব্রো ফগ): কখনো কখনো স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ ও চিন্তাশক্তিতে সমস্যা অনুভব করেন, যা ‘ফাইব্রো ফগ’ নামে পরিচিত।
  • মাথাব্যথা: ফাইব্রোমাইলজিয়ায় আক্রান্ত অনেক রোগী মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন।
  • মানসিক ও আবেগীয় পরিবর্তন: দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা ও ক্লান্তির কারণে রোগীদের মধ্যে উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও মানসিক চাপ দেখা দেয়।

অন্যান্য উপসর্গ

  • শব্দ বা আলোয় অতিসংবেদনশীলতা, হজমজনিত সমস্যা, যেমন ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) দেখা দিতে পারে।
  • ফাইব্রোমাইলজিয়ার উপসর্গগুলো ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভিন্ন হতে পারে এবং একাধিক উপসর্গ একসঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারে।

ফাইব্রোমাইলজিয়ার চিকিৎসা কী

  • ফাইব্রোমাইলজিয়া পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন পন্থায় উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ ও রোগীর জীবনমান উন্নত করা যায়। রোগটি নির্ণয় বা শনাক্ত করা কঠিন। একজন অভিজ্ঞ বাতরোগ বা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার পরিকল্পনা করা উচিত।
  • মনস্তাত্ত্বিক থেরাপি (সাইকোথেরাপি): উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (সিবিটি) রোগীর মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে ব্যথা ও ক্লান্তির সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা কিছু রোগীর ক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে।
  • জীবনধারার ইতিবাচক পরিবর্তন যেমন—নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তথ্য সুত্রঃ অনলাইন থেকে

আরো জানুনঃ

হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক ও স্মৃতিভ্রমের ঝুঁকি কমায় যেসব খাবার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *